পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই’র সঙ্গে বিএনপি নেতারা বৈঠক করেছেন আওয়ামী লীগের এমন বক্তব্য নাকচ করে দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপির সঙ্গে বিদেশি সংস্থার কোনো সম্পর্ক নেই। আওয়ামী লীগের প্রবণতা হলো বিএনপিকে হেয় করা। বিএনপির সঙ্গে আইএসআই’র বৈঠকের বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগ যে বক্তব্য দিয়েছে তা প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি। অন্যথায় এই মিথ্যা বক্তব্যের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানান বিএনপি মহাসচিব।
সোমবার বিকেলে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল একথা বলেন। ফখরুল বলেন, বিএনপি কোনো সংস্থা ও দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে ক্ষমতায় আসে না। বিএনপি বরাবরই নিজেদের যোগ্যতায় জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসে।
তিনি বলেন, প্রথমে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রহমান, পরে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমরা নাকি পাকিস্তানি দূতাবাসের সঙ্গে বসেছি। আব্দুর রহমানকে না হয় বাদ দিলাম। তিনি তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। ওবায়দুল কাদের সাহেব এর মতো দায়িত্বশীল নেতা মুখ দিয়ে এমন চরম জঘন্য মিথ্যাচার শুধু অপ্রত্যাশিতই নয়, এটি রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
ফখরুল বলেন, দৃঢ়ভাবে বলতে চাই এ ধরনের কোনো বৈঠক লন্ডনেও হয়নি। এটি বিএনপিকে হয়ে করা। এ ধরনের বক্তব্য প্রত্যাহার করার দাবি জানাই। অন্যথায় আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হব।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভয়াবহ কঠিন সময়ে একটি অসমতল ভূমিতে আমরা নির্বাচন করতে যাচ্ছি। বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার ১০ মাস হতে চলছে, আমরা দলকে, জোটকে, ফ্রন্টকে ঐক্যবদ্ধ রেখে আমরা প্রায় ৩শ আসনে মনোনয়ম দিতে সক্ষম হয়েছি। সরকারসহ বিভিন্ন মহল থেকে প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতো হয়েছে।
তিনি বলেন, নির্বাচনকে প্রহসন করার জন্যই এই সরকার সমস্ত আয়োজন করেছে। রিটার্নিং অফিসাররা আমাদের প্রার্থীদের বাদ দিলেও হাইকোর্টের নির্দেশনায় আমরা প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছি।
সোস্যাল মিডিয়ার ওপর ভয়াবহ আঘাত এসেছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমাদের অনেক সোস্যাল অ্যাকটিভিস্টদের গুম করে ফেলা হচ্ছে, কারাগারে দেয়া হচ্ছে। সমস্ত স্বাধীন চিন্তা, মুক্ত চিন্তা, বাকস্বাধীনতা হরণ করে নিয়েছে। ৫৮টি মিডিয়া বন্ধ করে দিয়েছে।
ফখরুল বলেন, দেশকে রক্ষা করতে হলে, জাতিকে রক্ষা করতে হলে মিডিয়ার দায়িত্ব হলো, সঠিক সংবাদ প্রচার করা। আমাদের এখানে সামান্য বিক্ষোভ হলে মিডিয়া ফলাও করে প্রচার হয়। আওয়ামী লীগের কোন্দলে ২২ জন নিহত হয়েছে, যা আসেনি।
তিনি বলেন, এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি দেশকে সত্যিকার অর্থে রক্ষা করতে চান নির্বাচনটাকে উন্মুক্ত করুন। যেন সবাই অংশগ্রহণ করতে পারে, অন্যথায় এই দেশ আবারও দীর্ঘকালের জন্য স্বাধীনত হারাবে, এখান থেকে ফিরে আসেন।
আনুষ্ঠানিকভাবে কবে নাগাদ নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করবেন এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা প্রচারণা শুরু করব তবে আনুষ্ঠানিকভাবে কখন শুরু করব সেটা এখন বলতে পারছি না।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা ক্ষমতায় গেলে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট এবং ৫৭ ধারা অবশ্যই বাতিল করব।
সূত্র, জনকণ্ঠ